আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
অতিরিক্ত ১০ লাখ টন এলএনজি দেবে না কাতার
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: দেশের গ্যাসসংকট কাটাতে কাতার ও ওমান থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় চলমান দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বাইরে কাতার থেকে অতিরিক্ত ১০ লাখ টন এলএনজি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কাতার জানিয়েছে, ২০২৫ সালের আগে বিদ্যমান চুক্তির আওতায় অতিরিক্ত এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে কাতার।
চলতি বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অতিরিক্ত এলএনজি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের দেশের গ্যাসসংকটের বিষয়টি কাতারকে জানিয়ে এলএনজি সরবরাহ বাড়াতে তাদের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৫ সালের আগে আমাদের কাছে অতিরিক্ত এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে না। তবে চলমান এলএনজি সরবরাহ চুক্তির আওতায় কাতার যে এলএনজি কার্গো সরবরাহ করছে, তা বছরের শুরুর দিকে বেশি সরবরাহ করার জন্য তাদের জানানো হবে। ’
দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি আমদানির জন্য কাতারের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৭ সালে হওয়া এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০৩২ সালে। কাতারের রাশ লাফান লিক্যুফাইড ন্যাচারাল গ্যাস কম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে এই চুক্তি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এ চুক্তির আওতায় গত পাঁচ বছরে কাতার থেকে ১৪৭ এলএনজিবাহী কার্গো দেশে এসেছে। এখন ‘সাইড লেটার’ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ বার্ষিক অতিরিক্ত ১০ লাখ টন এলএনজি কাতার থেকে আমদানি করতে চায়।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি বিক্রয় ও ক্রয় চুক্তি (এসপিএ) আওতায় বার্ষিক ১.৮ থেকে ২.৫ মিলিয়ন টন চুক্তি রয়েছে। বিদ্যমান সরবরাহের বাইরে অতিরিক্ত এক মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানির প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু কাতার বিদ্যমান সরবরাহের বাইরে অতিরিক্ত এলএনজি সরবরাহ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। একই সঙ্গে কাতারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গ্যাসসংকটের হালনাগাদ তথ্য জানাতে বলা হয়।
জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, ‘আমাদের চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত এলএনজির জন্য কাতারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে তাদের এলএনজির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের অতিরিক্ত এলএনজি দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কাতার। এর পরও আমরা কাতার থেকে অতিরিক্ত এলএনজি আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার বছরে আমাদের ৪০টি এলএনজিবাহী কার্গো দিচ্ছে। ওমান দিচ্ছে ১৬টি এলএনজিবাহী কার্গো। ’
এলএনজি আমদানি কার্যক্রমে যুক্ত থাকা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরেও দেশটির ৪০টি কার্গো সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১৪টি কার্গো সরবরাহ করেছে কাতার।