ভ্রমন
অতিরিক্ত দর্শনার্থীর কারণে সুন্দরবনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। বনের ইকো ট্যুরিজমের জায়গায় দর্শনার্থীর সংখ্যা অতিরিক্ত হওয়ায় বনের পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর সমস্যা সমাধানে নতুন প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষার কথা বলছে বনবিভাগ।
দেশের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর ছুটে আসেন দেশ বিদেশের বহু দর্শনার্থী। প্রকৃতি প্রেমীরা অবসরে ছুটে আসেন এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে। সুন্দরীসহ ৩শ’ ৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৩শ’ ১৫ প্রজাতির পাখি ও ৩শ’ ৭৫ প্রজাতির বণ্যপ্রানীর অভয়ারণ্য রয়েছে সুন্দরবনে।
দর্শনার্থীদের কথা বিবেচনায় রেখে বন বিভাগ সাতটি জায়গায় গড়ে তুলেছে ইকো ট্যুরিজম। কিন্তু ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত দর্শনার্থীর আগমনে বনের ক্ষতির কথা বলছেন সুন্দরবন প্রেমীরা।
সুন্দরবন একাডেমীর পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সুন্দরবনের কোন অংশে প্রতিদিন কতজন দর্শনার্থী যেতে পারবে তার একটা হিসাব থাকা উচিত। প্রতিদিন প্রচুর লোক সেখানে যাচ্ছে আর ইকো ট্যুরিজমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট করছে।’
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. নাজমুল সাদাত জানান, ‘আমরা ইচ্ছামত অনুমতি দিয়েই চলেছি। ইকো সিস্টেমের কোন ক্ষতি হবে না এমন একটা স্পটে হয়তো প্রতিদিন ২৫০জন দর্শনার্থী যেতে পারবে। সেখানে যাচ্ছে ২৫০০ জন। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
বনের এই সৌন্দর্য উপভোগে সহায়তা করেন গাইডরা। আর তাই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদেরকেও সহায়তা দাবী জানালেন দর্শনার্থীরা। দর্শনার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইকো ট্যুরিজমের স্থান বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের তাগিদ দিলেন, ট্যুর অপারেটরদের সংগঠনের নেতা।
ট্যুর অপারেটর অব সুন্দরবন সভাপতি মঈনুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, ‘এ বছর দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি বেড়েছে। এটা একটা ভালো লক্ষণ। তাই যদি অবকাঠামো উন্নয়ন হয়, দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আমি মনে করি।’
বন বিভাগ খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ মঈনুদ্দিন খান বলেন, ‘সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প নামে ইতিমধ্যে একটি প্রকল্পের অনুমোধনের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি এটা অনুমোদন পাবে।’ পর্যটন শিল্পের এই অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমস্যা নিরসণে প্রকল্প অনুমোদনের কথা বলছে বন বিভাগ।
শুধু প্রকল্প অনুমোদন নয়, তা বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
/এএস